ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো



1.৩ বছরে ফিলিস্তিনিকে ৩ মিলিয়ন ডলার দিয়ে সহায়তা করেছে এই মানুষটি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো !

2.বিশ্বকাপের প্রীতি ম্যাচে ইসরায়েলি প্লেয়ারদের সাথে ক্ষোভে তিনি জার্সিও বদলাননি। –
ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে মুসলিম হওয়া লাগে না। দরকার মানবতার !!
3. ২০১০-১১ মৌসুমে রোনালদো তার অর্জিত গোল্ডেন বুটটি ফিলিস্তিনি মুসলমান অনাথ শিশুদের চিকিৎসা ও শিক্ষা বাবদ দান করেন যার মূল্য ১৫০ কোটি টাকা। রোনালদো তার অর্জিত বাৎসরিক আয়ের একাংশ মুসলিম এতিমখানা ও গির্জায় দান করেন। এই উদারতা দেখে সৌদি রাষ্ট্রপতি তাকে উপহার হিসেবে পবিত্র কোরআন শরীফ দেন এবং রোনালদো তা সাদরে গ্রহন করেন।

6.মানচেস্টারের বাড়ি বিক্রি করে সিরিয়ায় ৫ হাজার ঘর তৈরি করে দেন রোনালদো । সিরিয়ার অসহায় মুসলিম বাচ্ছাদের পাশে ছিলেন তিনি রোনালদো চ্যাম্পিয়ানস লীগ জয়ের জন্য দল থেকে যে টাকা পেয়েছিল,তা দাতব্য চিকিৎসালয়ে দান করেন।এক শিশুর ব্রেইন অপারেশনের জন্য নিজের অটোগ্রাফ জন্য নিজের অটোগ্রাফ সহ জার্সি এবং ব্রান্ডের একজোড়া বুটজুতা বিক্রি করে টাকা দেন এই রোনালদো ।


7.ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নেপালকে বাংলাদেশী টাকায় ৬১ কোটি ১৩ লক্ষ ৬৫ হাজার ৪ শত
৯৫ টাকা ২০ পয়সা দান করেছে ।

8.২০১২ সালে সবচেয়ে দানশীল ব্যাক্তিদের মধ্যে ১ম নামটা ছিলো ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো গায়ে ট্যাটু করেন না এটা সবাই জানে ।
9.আবার ২০১৬ ইউরোতে:
রোনালদোর ডান কানের পাশে দুটো দাগ দেখা গিয়েছে। আর এই হেয়ার কাট নিয়েই তৈরি হয়েছে জল্পনা কল্পনা। দেখা দিয়েছে কৌতূহল। রোনালদোর মাথায় দুটো দাগ কেন? স্প্যানিশ এক ওয়েবসাইটের খবর অনুযায়ী রোনালদো মোটেও ফ্যাশন করে এ ভাবে চুল ছাঁটেননি। এর পিছনে রয়েছে মানবিক কারণ। সেই গল্প শুনলে চোখে জল আসতে বাধ্য। পর্তুগালের একটি শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত। সেই শিশুটির চিকিৎসার খরচ বহন করেছেন রোনালদো। খবর অনুযায়ী, সেই শিশুটি নাকি দুটো ক্ষত নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করে। আর সেই শিশুটির জন্যই রোনালদো এমন ভাবে চুল ছেঁটেছেন। ডান কানের কাছে দুটো দাগ দেখা যাচ্ছে। অসুস্থ শিশুটিরপাশে যে তিনি রয়েছেন, সেটাই ইউরোর ময়দানে স্পষ্ট করে দিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।

সংক্ষিপ্ত জীবনি:-

ফুটবল বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত খেলোয়াড় কে? সম্ভবত বিভিন্ন কারণে উত্তরটি হবে পর্তুগালের কিংবদন্তী ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো । ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাবের হয়ে খেলেন এবং পাশাপাশি তিনি পর্তুগাল জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক । ছোট একটি শহরের এক মালির ছেলে ছিলেন রোনালদো- যিনি কঠোর অধ্যবসায় ও পরিশ্রমের মাধ্যমে আজ নিজেকে এমন এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে এসেছেন- যেখানে আরোহণ করা যেকোনো খেলোয়াড়ের সারা জীবনের স্বপ্ন থাকে ।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বর্তমান সময়ে সবচেয়ে পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত খেলোয়াড় । আজ তার আলিসান বাড়ি, কোটি টাকা দামের গাড়ি আছে । কিন্তু এই মানুষটি একটা সময়ে থাকতেন টিনের তৈরি একটি ছোট্ট বাড়িতে । খুব কম মানুষই জানে, এমনকি তার ভক্তদের মধ্যে অনেকেই হয়ত জানেন না, একটা সময়ে কতটা কষ্টের মধ্যে দিয়ে তিনি গেছেন ।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ৫ই ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫ সালে পর্তুগালের মাদেইরাতে জন্মগ্রহণ করেন । পুরো নাম ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো দস স্যান্তোস এভেইরো । তার বাবা জোসে দিনিস আভেইরো ছিলেন মালি, যিনি পার্ক ও মাঠের পরিচর্যা করে পরিবার চালাতেন । রোনালদোর পরিবারে সে ছাড়া বড় এক ভাই ও দুই বোন আছে । রোনালদোর পুরো পরিবার ছোট একটা টিনের ঘরে থাকতো । খুব অল্প বয়স থেকে ফুটবল শুরু তার । মাত্র আট বছর বয়সে প্রথমে “আন্দোরিনহা” নামে একটি অপেশাদার দলে তার ক্রীড়াজীবন শুরু হয়, যেখানে তার বাবা কাজ করতেন । রোনালদোর মা মারিয়া ডোলোরেস ছোটবেলায় তাকে ক্রাই বেবি বলে ডাকতেন, কারণ কোন ম্যাচ ভাল না খেললেই তিনি মাঠে বসে কান্নাকাটি করতেন । এখনো অবশ্য এই প্রচলনটি রয়ে গেছে, তার দলের অন্য খেলোয়াড়রা তাকে মজা করে এই নামে ডাকেন ।১৯৯৫ সালে, দশ বছর বয়সের মধ্যেই পর্তুগালে তার সুনাম ছড়াতে থাকে । মাদিয়েরার শীর্ষ দুটি দল “সিএস মারিতিমো” ও “সিডি ন্যাশিওনাল” তাকে পেতে উম্মুখ ছিল । অপেক্ষাকৃত বড় দল মারিতিমো আন্দোরিনহার ব্যবস্থাপকের সাথে একটি মিটিং-এ অংশ নিতে পারেননি । ফলে সিডি ন্যাশিওনাল রোনালদোকে হস্তগত করে । ন্যাশিওনালের হয়ে সে মৌসুমে শিরোপা জেতার পর স্পোর্টিং দলের সাথে তিনি চুক্তিবদ্ধ হন । কিন্তু রোনালদোর ১৫ বছর বয়সে পরীক্ষায় ধরা পড়ে, তার হার্টে সমস্যা আছে । তাকে বাঁচতে হলে ফুটবল খেলা ছেড়ে দিতে হবে বলে ডাক্তার পরামর্শ দেন । তখন তার সামনে মাত্র দুইটি পথ খোলা ছিল- হয় ফুটবল ছেড়ে দাও, নাহয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হার্টের সার্জারি করাও । তার জন্য ফুটবল ছাড়াটাই বেশি কঠিন ছিল বলে সে মৃত্যুর কথা না ভেবে হার্টের সার্জারি করালেন এবং সৌভাগ্যক্রমে সার্জারি সফল হয় । তিনি আবার খেলায় ফিরে আসেন । এবার এক নতুন শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন নিজের স্বপ্নকে সফল করতে । কিন্তু এরপরই আরও এক কঠিন বিপর্যয়ের মুখোমুখি হলেন তিনি । তার সবচেয়ে কাছের মানুষ, সবচেয়ে প্রিয়, বাবা অতিরিক্ত মদ খাওয়ার কারণে মারা যান । বাবার মৃত্যু রোনালদোকে অনেক বেশি ভেঙ্গে দেয় । কারণ, তার জীবনে বাবা এমন একজন বন্ধু ছিলেন যার সাথে সে সব কথা শেয়ার করতে পারত । সেই থেকে রোনালদোকে প্রতিজ্ঞা করেন যে তিনি নিজে কখনো মদ ছুঁয়ে দেখবেন না । এবং তিনি প্রতিজ্ঞা রেখেছেন । বাবা হঠাৎ মারা যাবার পর তাদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ হতে লাগল । তখন তার মা অন্যদের বাসায় কাজ করে সংসার চালাতেন । তার একসাথে যে এতোগুলো সঙ্কট যাচ্ছে, রোনালদো তাতে বিন্দুমাত্র আশা হারাননি । সব সঙ্কটকে একপাশে সরিয়ে রেখে, নিজেকে সে কেবলমাত্র একটা জায়গাতেই কেন্দ্রিভুত করেন । একজন দক্ষ ফুটবলার হিসেবে নিজেকে তৈরি করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে থাকেন । রোনালদো ১৭ বছর বয়সে পর্তুগাল স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেন । ম্যাচটি ছিল লিবান ক্লাবের সাথে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ক্লাবের ।

এই ম্যাচে অ্যালেক্স ফার্গুসনের রোনালদোর খেলা দেখেই সাথে সাথে তাকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলার চুক্তি করেন । তখন রোনালদোকে নেওয়ার জন্য এই ক্লাবটি ১৭ মিলিয়ন ডলার খরচ করে । এটা ইংলিশ ফুটবল ক্লাবের ইতিহাসে কোন নতুন সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়কে দেওয়া সবচেয়ে বড় পারিশ্রমিক । রোনালদো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে আগস্ট ২০০৩ থেকে মে ২০০৯ পর্যন্ত খেলেন । এই সময়ে তিনি ১৯৬ ম্যাচে ৮৪টি গোল করেন । তারপর ২০০৯ সালে রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব ১৩২ মিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে রোনালদোকে দলে নেয় । রিয়াল মাদ্রিদের এই চুক্তি ছিল ২০১৫ সাল পর্যন্ত । তাই নতুন চুক্তিতে রিয়াল মাদ্রিদের সাথে ২০২১ সাল পর্যন্ত ২২৫ মিলিয়ন ডলারে আরেকটি চুক্তি হয় । নতুন এই চুক্তির মাধ্যমে পৃথিবীর সবচেয়ে দামী খেলোয়াড় হিসেবে রোনালদোর নাম উঠে গেছে । শুধু এমন না যে এই টাকা দিয়ে রোনালদো নিজের ব্যাংক ব্যাল্যান্স করছেন, সম্পদ বাড়াচ্ছেন । বরং তিনি এই টাকা থেকে একটা বড় অংশ খরচ করছেন সামাজিক উন্নয়নে । একবার তিনি ১০ মাসের এক শিশুকে বাঁচানোর জন্য প্রায় ৭৯ হাজার ডলার খরচ করেন । রোনালদো প্রতিবছর দুইবার রক্তদান করেন, তাই সে তার শরীরে কোন ট্যাটু করান না । ফুটবল খেলা ছাড়াও তিনি একজন ভালো বাস্কেট বল খেলোয়াড় ।
কী শিখলেন রোনালদোর জীবন থেকে?
অনেকেই ভাবছেন ওর এতো এতো টাকা! কিন্তু একটিবার মূল্যায়ন করে দেখুন- একজন মানুষ রোনালদোকে । নিজের স্বপ্ন পূরণে কতটা মরিয়া ছিলেন তিনি, কতটা পরিশ্রমী রোনালদো? কি দুঃসহ কঠিন সময় তারও ছিল? সবার আগে অন্য একটি ব্যাপারে একটু লক্ষ্য করুন । একজন মানুষ এমনি এমনি বড় হয় না । সবার আগে যেটা প্রয়োজন, তাকে মানবিক হতে হবে । সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন মনের মানুষ । এটা কেন্দ্র । এখান থেকেই তৈরি হয়, স্বপ্ন, ইচ্ছাশক্তি, ভালোবাসা, সংকল্পের দৃঢ়টা, কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা । বড় হতে হলে, সবার আগে একজন মানুষ হওয়ার চেষ্টা করুন ।
আপনার আশে পাশে যদি এমন কোন মানুষ থাকে যার এই লেখাটি পড়া উচিত বলে মনে করেন , তার সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন । অনুপ্রেরণামূলক গল্প, সফল ব্যক্তিদের জীবনী, সফলতার সূত্র এবং জীবনের নানান সমস্যা।
সূত্র:ইন্টারনেট

No comments

Powered by Blogger.